ক্লাউড কম্পিউটিং কি? | Cloud Computing

ক্লাউড কম্পিউটিং কী, কিভাবে এটি কাজ করে এবং কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ


ক্লাউড কম্পিউটিং কি শুধু একটি trend (প্রবণতা)? নাকি এটা আসলেই আমাদের কাজ করার উপায়, এবং ডেটা অ্যাক্সেস ও সঞ্চয় করার উপায় বদলে দিয়েছে?

তা জানতে হলে পড়তে থাকুন!

ভূমিকা

Here is the English version of this blog.

এই ব্লগে আমরা যা শিখবো তার মধ্যে রয়েছে:

  • ক্লাউড কম্পিউটিং কি?
  • ক্লাউড কম্পিউটিং এর সুবিধা
  • ক্লাউড কম্পিউটিং কিভাবে কাজ করে?
  • কেন আমাদের ক্লাউড কম্পিউটিং শেখা উচিত?

আসল প্রশ্নের উত্তর দিয়ে শুরু করা যাক…

ক্লাউড কম্পিউটিং কি?

ক্লাউড কম্পিউটিং হল ইন্টারনেটের মাধ্যমে কম্পিউটিং সেবার অন-ডিমান্ড ডেলিভারি – যেমন সার্ভার, স্টোরেজ, এবং অ্যাপ্লিকেশন।

অতীতে, যদি আপনি বা কোন কোম্পানি একটি অ্যাপ্লিকেশন চালাতে চাইতেন, তাহলে আপনাকে আপনার নিজের হার্ডওয়্যার এবং সফ্টওয়্যার কিনতে হতো। তারপরে আপনাকে সেগুলো নিজে ম্যানেজ করতে হতো বা তা করার জন্য অন্য কাউকে নিয়োগ করতে হতো। এটিতে সময় এবং খরচ দুটোই বেশি লাগত।

কিন্তু ক্লাউড কম্পিউটিং-এর সাহায্যে, আপনি কম্পিউটিং সেবার তাৎক্ষনিক অ্যাক্সেস পেতে পারেন, প্রাই pay-as-you-go pricing (বা যতটুকু ব্যবহার ততটুকু খরচ) হিসেবে। এটি আপনাকে আপনার নিজস্ব হার্ডওয়্যার এবং সফ্টওয়্যার ক্রয়, রক্ষণাবেক্ষণ এবং আপগ্রেড না করেই সরাসরি কম্পিউটিং সেবার অ্যাক্সেস করতে দেয়৷

ক্লাউড কম্পিউটিং এর সুবিধা (Benefits)

কেন ক্লাউড কম্পিউটিং বিদ্যমান? উত্তরটি এর অসংখ্য সুবিধার মধ্যে রয়েছে।

  1. খরচ সঞ্চয় (Cost Savings): ক্লাউড কম্পিউটিং এর সাহায্যে, আপনাকে অতীতের মত ব্যয়বহুল হার্ডওয়্যার বা আইটি infrastructure (পরিকাঠামো) এ বিনিয়োগ করতে হবে না। আপনি শুধুমাত্র সেই সকল infrastructure এবং সেবা জন্য খরচ করবেন যা আপনি ব্যবহার করবেন এবং যখন আপনি সেগুলো ব্যবহার করবেন। ক্লাউড কম্পিউটিং ব্যবহারকারী সংস্থাগুলো একটি বিশাল প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা অর্জন করে, কারণ তারা ব্যয়বহুল infrastructure এবং রক্ষণাবেক্ষণের খরচ দেওয়ার পরিবর্তে তাদের পণ্য এবং দল তৈরিতে আরও বেশি মনোযোগ দিতে পারে।
  2. দ্রুততা (Agility): নিজের দ্বারা সার্ভার কিনতে, কনফিগার করতে এবং স্থাপন করতে দিনের-পর-দিন অপেক্ষা না করে, আপনি ক্লাউডের মাধ্যমে ইন্টারনেটে কম্পিউটিং সেবাগুলোতে তাৎক্ষনিক অ্যাক্সেস পেতে পারেন৷ এতে করে, ব্যবসাগুলো আগে যা সম্ভব ছিল তার চেয়ে অনেক দ্রুত অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করতে পারে এবং তাদের গ্রাহকের কাছে পৌঁছাতে পারে। এটি উদ্ভাবনের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
  3. অভিযোজন (Flexibility): আজকের দ্রুত-গতির সর্বদা-পরিবর্তনশীল প্রযুক্তির বিশ্বে, ব্যবসাগুলোকে নতুন পরিস্থিতির সাথে দ্রুত খাপ খাইয়ে নিতে হয়। দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি ছাড়াই চাহিদা অনুযায়ী কম্পিউটিং সেবাগুলো অ্যাক্সেস করতে পারা কোম্পানিগুলোকে তাদের পরিকল্পনা পরিবর্তন করতে এবং অপ্রত্যাশিত বাধাগুলো অতিক্রম করতে ক্ষমতা দেয় ক্লাউড কম্পিউটিং৷
  4. স্কেলেবিলিটি (Scalability): ক্লাউড কম্পিউটিং সেবাগুলো ইলাস্টিক (elastic) – মানে, যখন আপনার প্রয়োজন তখন আপনি কম্পিউটিং সেবাগুলো ব্যবহার বাড়াতে পারেন এবং যখন আপনার প্রয়োজন নয় তখন আপনার ব্যবহার কমাতে পারেন৷ ফলাফল? অতুলনীয় Scalability! নেটফ্লিক্স, উবার, টুইচ এবং আরও অনেক কোম্পানিকে বিশাল আকারে স্কেল করতে সক্ষম করেছে ক্লাউড কম্পিউটিং।
  5. বিশ্বায়ন (Global Reach): ক্লাউড কম্পিউটিং এর মাধ্যমে, আপনি বিশ্বব্যাপী কাস্টমারের পৌঁছাতে পারেন, যা আগে পৌঁছানো খুবই ব্যয়বহুল হতো। ক্লাউড আপনাকে কয়েক মিনিটের মধ্যে সারা বিশ্বে আপনার অ্যাপ্লিকেশনগুলো স্থাপন করতে এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে যে কোনও জায়গা থেকে যে কোনও সময় অ্যাক্সেস করতে দেয়৷ আপনার গ্রাহকদের কাছাকাছি আপনার অ্যাপ্লিকেশনগুলো চালানোর মাধ্যমে, আপনি latency কমাতে পারেন, সেইসাথে, performance (কর্মক্ষমতা) এবং user experience (UX) উন্নত করতে পারেন৷

আমি নিশ্চিত যে আরও অনেক ক্লাউড কম্পিউটিং সুবিধার তালিকা করা যাবে, যেমন আরো ভালো disaster recovery (দুর্যোগ পুনরুদ্ধার), security (নিরাপত্তা), collaboration (সহযোগিতা), ইত্যাদি।

তবে চলুন একটু গভীরে যাই…

ক্লাউড কম্পিউটিং কিভাবে কাজ করে?

অনেকেই ঠাট্টা করে বলে যে: “There is no Cloud, just someone else’s computer” মানে “ক্লাউড বলতে কিছু নেই, শুধু অন্য কারো কম্পিউটার।”

সাদাসিধা অর্থে এটি সত্য হতে পারে, তবে এটি পুরো ছবিটি আঁকে না।

ক্লাউড কম্পিউটিং তৈরি করা হয়েছে সার্ভার কম্পিউটারের একটি বিশাল নেটওয়ার্ক জুড়ে, যা বিশ্বব্যাপী অনেক ডেটা সেন্টারে বিস্তৃত।

সার্ভারের এই নেটওয়ার্ক গুলোকে ক্লাউড সার্ভিস প্রোভাইডাররা (CSPs) রক্ষণাবেক্ষণ করে যেমন Amazon Web Services, Microsoft Azure, Google Cloud Platform, ইত্যাদি। আপনি যখন আপনার ডেটা store করতে অথবা আপনার অ্যাপ্লিকেশনগুলো চালানোর জন্য একটি ক্লাউড কম্পিউটিং সেবা ব্যবহার করেন, তখন আপনি CSP-এর দ্বারা ভাড়া দেওয়া কম্পিউটিং সেবা ব্যবহার করেন৷

ক্লাউড প্রোভাইডাররা সার্ভারগুলোকে রক্ষণাবেক্ষণ এবং আপডেট করার যত্ন নেয়, নিশ্চিত করে যে সেগুলো সর্বদা ঠিকঠাকভাবে চলছে এবং আপনার ডেটা সর্বদা নিরাপদ এবং সুরক্ষিত।

আর কি করতে হয় তাদের?

  • ডেটা এনক্রিপশন (encryption) করা, একাধিক স্তরের নিরাপত্তা দেয়া, এবং high availability (উচ্চ প্রাপ্যতা) ও durability (স্থায়িত্ব) এর জন্য একাধিক সার্ভারে replicate/কপি করা,
  • redundancy এবং fault tolerance (ত্রুটি সহনশীলতা) এর জন্য বিভিন্ন ডেটা সেন্টারে ভার্চুয়ালাইজেশন স্তর এবং সফ্টওয়্যার চালানো,
  • লোড বা ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়লে অটো-স্কেলিং আউট, এবং লোড কমে গেলে অটো-স্কেলিং ডাউন করা,
  • যখন একটি সার্ভারে সমস্যা হয় তখন অন্য একটিতে migrate (স্থানান্তরিত) করা,
  • শুধুমাত্র আপনি যে পরিমাণ সেবা ও resource ব্যবহার করেছেন তার জন্য আপনার বিল গণনা করা,
  • প্রকৃত ডেটা সেন্টার পরিচালনা এবং সুরক্ষিত করা,

এবং আরো অনেক কিছু!

বেশিরভাগ প্রক্রিয়াগুলো A – Z পর্যন্ত automated (স্বয়ংক্রিয়)। এটি সময় বাঁচায়, দক্ষতা উন্নত করে, নিরাপত্তা বাড়ায়, এবং মানুষের ত্রুটি কমায়।

ক্লাউড প্রোভাইডাররা কি পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ এবং অপারেশনাল বোঝা নেয় তা নির্ভর করে ক্লাউড সেবার ধরনের উপর, যেটা সেই সেবার দামও নির্ধারণ করে। এটি infrastructure, প্ল্যাটফর্ম, বা সফ্টওয়্যার-এ-সার্ভিস (যথাক্রমে IaaS, PaaS, বা SaaS) হতে পারে।

ক্লাউড কম্পিউটিং এর সুবিধাগুলো আমরা পাই ‘Economies of scale’ এর কারণে। যেমন, অনেক ব্যবহারকারীর উপর খরচ ছড়িয়ে দিয়ে একজন ক্লাউড প্রোভাইডার তার বিদ্যুৎ, সার্ভার, নেটওয়ার্কিং সরঞ্জাম, ইত্যাদি সস্তায় কিনতে পারে। এরই সাথে যোগ করুন বৃহৎ-স্কেলের অটোমেশন, একাধিক স্তরের নিরাপত্তা, এবং ইন্ডাস্ট্রির কিছু স্মার্ট engineers – তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন কেন ক্লাউড কম্পিউটিংকে আজ digital transformation (ডিজিটাল রূপান্তর) এর চাবিকাঠি বলা হয়।


ক্লাউড কম্পিউটিং কেন শিখবেন?

ক্লাউড কম্পিউটিং-এর বৃদ্ধির সাথে, এই ক্ষেত্রে দক্ষ প্রোফেসনালদের চাহিদা কেবলই বাড়বে। ক্লাউড কম্পিউটিং শেখার শীর্ষ কারণগুলো হল:

  1. উচ্চ বেতনের চাকরির সুযোগ (High-Paying Job Opportunities): ক্লাউড কম্পিউটিং শিল্প খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। indeed.com এর রিপোর্ট অনুযায়ী, অক্টোবর 2015 এবং অক্টোবর 2019 এর মধ্যে ক্লাউড কম্পিউটিং চাকরি 55% বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও, ক্লাউড প্রোফেসনালদের গড় বেতন অন্যান্য আইটি পদের চেয়ে বেশি; Glassdoor অনুসারে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর $100,000 এর চেয়ে বেশি।
  2. উচ্চ প্রভাবের অবস্থান (High Impact role): ক্লাউড কম্পিউটিং শেখার মাধ্যমে, আপনি আপনার কোম্পানিতে – দক্ষতার উন্নতি, খরচ কমানো এবং পণ্য প্রকাশের গতি বাড়িয়ে, একটি বড় প্রভাব আনতে পারেন। আপনার দক্ষতা উচ্চ চাহিদা হবে এবং যে কোনো কোম্পানিতে একটি মূল্যবান সম্পদ হয়ে উঠবেন।
  3. অনেক শেখার সুযোগ (Massive Learning Potential): ক্লাউড কম্পিউটিং আমজনতা এবং প্রতিষ্ঠানদের জন্য সম্পূর্ণ নতুন শেখার জগত খুলে দিয়েছে। যে কেউ ইন্টারনেটের মাধ্যমে যেকোন জায়গা থেকে প্রচুর পরিমাণে তথ্য এবং resources অ্যাক্সেস করতে পারে, যা তাদের জ্ঞান এবং দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে।
  4. স্বাধীনতা (Freedom): ক্লাউড কম্পিউটিং এর মাধ্যমে, আপনি বিশ্বের যেকোন স্থান থেকে আপনার ডেটা এবং অ্যাপ্লিকেশনগুলো অ্যাক্সেস করতে পারবেন, যতক্ষণ আপনার ইন্টারনেট সংযোগ থাকবে। এটি আপনাকে যে কোনও জায়গা থেকে এবং যে কোনও সময় কাজ করার স্বাধীনতা দেয়৷

উপসংহার

ক্লাউড কম্পিউটিং একটি অপরিহার্য প্রযুক্তি যা আমাদের কাজ করা, ডেটা সঞ্চয় এবং অ্যাক্সেস করার পদ্ধতিতে বিশাল পরিবর্তন এনেছে। আপনি একজন স্টুডেন্ট, একজন আইটি প্রোফেসনাল, বা একজন ব্যবসার মালিক হোন না কেন, ক্লাউড কম্পিউটিং সম্পর্কে শেখার মাধ্যমে আপনি প্রযুক্তির দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে সফল হওয়ার দক্ষতা পেয়ে যাবেন।

তাহলে আর কিসের অপেক্ষা?

ক্লাউড কম্পিউটিং এবং অন্যান্য আধুনিক DevOps বিষয়গুলোতে আপ-টু-ডেট থাকতে TechMormo Newsletter এ সাইন আপ করে ফেলুন।

আমাদের YouTube চ্যানেল এ Subscribe করতে ভুলবেন না, যেখানে আমরা DevOps বিষয়গুলোকে সহজ করে তুলি আকর্ষণীয় অ্যানিমেটেড ভিডিওয়ের মাধ্যমে।

ব্লগটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ!

সামনে আমাদের আরও অনেক exciting DevOps content আসছে! 🙌

আজ এই পর্যন্তই।

Be bold and keep learning.

But most importantly,

Tech care!


Don’t see the form above? Click here.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Latest posts